স্বদেশ ডেস্ক:
বৃষ্টিহীনতার পাশাপাশি তাপমাত্রার সঙ্গে বেড়েছে গরমও। তাপমাত্রা বাড়ায় ঝরছে আম ও লিচুর গুটি। এই গুটি ঝরাকে স্বাভাবিক বলছে কৃষি অফিস। বুধবার রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিস বলছে, বৃষ্টি না হলে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।
রাজশাহীর বাগান ঘুরে দেখা গেছে, মাটিতে আমের গুটি পড়ে আছে। বাগান মালিকরা বলছেন, বেশ কয়েকদিন থেকে আমের গুটি ঝরছে। গাছে পানি দেওয়া হচ্ছে। তবে এইভাবে আমের গুটি ঝরলে তারা লোকসানের পড়বেন।
বাঘার চাষী ও ব্যবসায়ী নওশাদ আলী বলেন, ‘বৃষ্টি না হওয়ার কারণে আমের গুটি ঝরে যাচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি পানি দিয়ে ঝরে পড়া রোধ করার। এবছর বেশিরভাগ গাছে আমের মুকুল আসেনি। তার পরেও যে মুকুল এসেছে; সেগুলো ঝরে যাচ্ছে। সবমিলে বিষয়টি নিয়ে আমরা চিন্তিত।’
কৃষি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিবছর গাছে যে পরিমাণের আমের গুটি আসে; তাতে গাছ ভেঙে পড়বে। সবগুটির তিনভাগের একভাগ টিকলেও গাছে জায়গা দেওয়া যাবে না। বর্তমানে রোদ ও গরমের কারণে যে গুটি ঝরছে সেটা স্বাভাবিক। তাকে চাষি ও ব্যবসায়ীদের চিন্তার কোনো কারণ নেই। বেশি গুটি ঝরলে গাছে পানি সেচ দিতে হবে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বলছে, রাজশাহী জেলায় এবছর আমের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর। গতবছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৭ হাজার ৪৯৩ হেক্টর। সেই হিসেবে আমের চাষ বাড়লেও গাছে আমের মুকুল ও গুটি কম আছে। তবে আমের লক্ষ্যমাত্রা চেয়ে অর্জন বেশি হয়েছে গতবছর। আর্জন ছিল ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর। এছাড়া এবছর লিচু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫২৪ হেক্টর। আর গতবছর লিচু ছিল ৫১৯ হেক্টর জমিতে।
আম ব্যবসায়ী আবদুস সালাম জানান, দুইটা বাগান পাতা অবস্থায় কিনেছিলাম। কিন্তু তেমন মুকুল আসেনি। যে মুকুল এসেছে সেখান থেকে কিছু কিছু ঝরে যাচ্ছে। তবে কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা বলেছে সমস্যা নেই। তারা এটাও বলেছে কম আম থাকলেও ফলন ভালো হবে।
রাজশাহী ফল গবেষণাকেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আলীম উদ্দীন জানান, এসময়ে গুটি ঝরা স্বাভাবিক। সাধারণত চারটি কারণে আমের গুটি ঝরে। এর মধ্যে পুষ্টির অভাব, পোকার আক্রমণ, রোগের আক্রমণ ও ধারণ ক্ষমতার বেশি আমের গুটি আসলে ঝরার সম্ভাবনা থাকে। তিনি বলেন, বর্তমানে আম ও লিচুর গাছে শতভাগ মুকুল থেকে গুটি হয়ে গেছে। বড় ধরনের ঝড় বৃষ্টি না হলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) তৌফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা চাষীদের আমের গাছে পানি দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। আমের যে গুটি ঝরছে সেটা স্বাভাবিক।’
Related